প্রাচীন সূক্ষ্ম মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে জামদানি শাড়ি বাঙালি নারীদের কাছে খুবই পরিচিত। জামদানি কাপড় মসলিনের উপর ডিজাইন করে তৈরি করা হয়। যদিও সূক্ষ্ম, সূক্ষ্ম ও মসৃণ মসলিন কালের আবর্তে বিভিন্ন কারণে বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তবুও জামদানি নামে পরিচিত মসলিনের একটি শাখা এখনো টিকে আছে।

Red Jamdani Saree

জামদানির নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। ‘জামদানি’ শব্দটি এসেছে ফার্সি ভাষা থেকে। ফারসি ‘জাম’ মানে কাপড় আর ‘দানা’ মানে বুটি। সেই অর্থে জামদানি মানে এমব্রয়ডারি করা কাপড়। একই সময়ে জামদানি ও মসলিনের প্রচলন শুরু হয়। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে জামদানির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। বিভিন্ন আরব, চীনা ও ইতালীয় পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের বর্ণনায়। কৌটিল্যের গ্রন্থে বাংলা ও পুন্ড্র অঞ্চলের উৎকৃষ্ট বস্ত্রের উল্লেখ আছে। এদের মধ্যে ছিল খুসুম, দুকুল, পৃষ্ঠপোষক ও কার্পাসিকা। রপ্তানির সময় কাপাসিকরের নাম মসলিন। মসলিন ছিল এক রঙের। আর তাতে সূচিকর্ম করা কাপড়কে বলা হতো জামদানি। মূলত ঢাকা জেলায় মসলিনের প্রসার ঘটে। ঢাকার সেনারগাঁও, ধামরাই ও রূপগঞ্জ মসলিনের জন্য বিখ্যাত ছিল। মগল আমলে জামদানি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সম্রাট জাহাঙ্গীর জামদানি রক্ষা করেন। প্রখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা চতুর্দশ শতাব্দীতে রচিত তার ভ্রমণকাহিনীতে সায়নারগাঁওয়ের বস্ত্র শিল্পের প্রশংসা করেছেন এবং মসলিন ও জামদানির কথা বলেছেন। যাইহোক, জামদানি শাড়ির সব বিখ্যাত এবং অবিস্মরণীয় নকশা এবং তাঁত এখন প্রায় বিলুপ্ত। এখন রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জের প্রায় ১৫৫টি গ্রামে এই শিল্পের বসবাস।

জামদানির বৈশিষ্ট্য: Red Jamdani Saree

জামদানির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এর জ্যামিতিক নকশা। এই জ্যামিতিক নকশায় ফুল, ভেষজ, কলকাসহ নানা নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। জামদানির বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন রয়েছে। তন্মধ্যে পান্না হাজার, তেরচা, পানসি, ময়ূরপঙ্খী, বাটপাতা, করলা, জল, বুটিদার, জলপাড়, দুবলি, দুরিয়া, বলিহার, কাটিহার, কালকাপাড় ইত্যাদির প্রচলন বেশি। একটি জামদানিতে ছয়টি ফুল বা ভেষজের নকশা তির্যকভাবে সারিবদ্ধ হলে তাকে তির্যক জামদানি বলে। সব জমিতে ফুল ও লতা বুনন অনুযায়ী জালের নকশা বলা হয়। ফুলকাটা জামদানি ফুলওয়ার, সারা মাঠ জুড়ে সারি সারি। দুরিয়া জামদানি দেরকাটা নকশায় সজ্জিত। একইভাবে পাড়ে কল্কির নকশা থাকলে তা হবে কলকাপার।

জামদানি শাড়ি খুব কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ কারণ তাঁতিরা তা হাতে বুনেন। তাই এসবের দামও অন্যান্য শাড়ির তুলনায় বেশি। যদি দুজন কারিগর একটি জামদানি শাড়ি তৈরির জন্য দিনে 12 থেকে 14 ঘন্টা কাজ করে, তাহলে ডিজাইনের উপর নির্ভর করে একটি সম্পূর্ণ শাড়ি তৈরি করতে সাত দিন থেকে ছয় মাস সময় লাগতে পারে। সাধারণত শাড়ি তৈরির সময়, সুতার গুণমান এবং কাজের সূক্ষ্মতার উপর নির্ভর করে একটি জামদানির দাম 3,000 টাকা থেকে 120,000 টাকা বা তার বেশি হতে পারে। যেহেতু জামদানি শাড়ি হাতে বোনা তাই শাড়ির নকশা খুবই উপাদেয় এবং নিখুঁত। ডিজাইনগুলো মসৃণ। কারিগর প্রতিটি সুতা হাতে বুনেন। সুতার কোনো অংশ বের হয় না। এ কারণে জামদানি শাড়ির সামনের অংশ এবং ভেতরের অংশের মধ্যে পার্থক্য করা খুবই কঠিন।

জামদানির বৈশিষ্ট্য:

জামদানির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এর জ্যামিতিক নকশা। এই জ্যামিতিক নকশায় ফুল, ভেষজ, কলকাসহ নানা নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। জামদানির বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন রয়েছে। তন্মধ্যে পান্না হাজার, তেরচা, পানসি, ময়ূরপঙ্খী, বাটপাতা, করলা, জল, বুটিদার, জলপাড়, দুবলি, দুরিয়া, বলিহার, কাটিহার, কালকাপাড় ইত্যাদির প্রচলন বেশি। একটি জামদানিতে ছয়টি ফুল বা ভেষজের নকশা তির্যকভাবে সারিবদ্ধ হলে তাকে তির্যক জামদানি বলে। সব জমিতে ফুল ও লতা বুনন অনুযায়ী জালের নকশা বলা হয়। ফুলকাটা জামদানি ফুলওয়ার, সারা মাঠ জুড়ে সারি সারি। দুরিয়া জামদানি দেরকাটা নকশায় সজ্জিত। একইভাবে পাড়ে কল্কির নকশা থাকলে তা হবে কলকাপার।